গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬
( ২০০৬ সনের ১৯ নং আইন )
[ ৯ মে ২০০৬ ]
দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকায় কতিপয় বিরোধ ও বিবাদের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালত গঠনকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকায় কতিপয় বিরোধ ও বিবাদের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালত গঠন এবং এতদ্সংক্রান্ত বিষয়াবলী সম্পর্কে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ
১৷(১) এই আইন গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে৷
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে৷
(৩) ইহা কেবলমাত্র ইউনিয়নের এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় প্রযোজ্য হইবে৷
সংজ্ঞা
২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(ক) “আমলযোগ্য অপরাধ” অর্থ ফৌজদারী কার্যবিধিতে সংজ্ঞায়িত Cognizable Offence;
1[(খ) “ইউনিয়ন” অর্থ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৫) এ সংজ্ঞায়িত ইউনিয়ন;]
2[(গ) “ইউনিয়ন পরিষদ” অর্থ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৬) এ সংজ্ঞায়িত ইউনিয়ন পরিষদ;]
(ঘ) “এখতিয়ারসম্পন্ন্ন সহকারী জজ” অর্থ যে সহকারী জজের এখতিয়ারভুক্ত সীমানার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নটি অবস্থিত সেই সহকারী জজ এবং যেক্ষেত্রে অনুরূপ এখতিয়ারসম্পন্ন একাধিক সহকারী জজ রহিয়াছেন সেইক্ষেত্রে অনুরূপ কনিষ্ঠতম সহকারী জজ;
(ঙ) “গ্রাম আদালত” অর্থ ধারা ৫ এর অধীন গঠিত গ্রাম আদালত;
(চ) “চেয়ারম্যান” অর্থ গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান;
(ছ) “তফসিল” অর্থ এই আইনের তফসিল;
(জ) “দণ্ডবিধি” অর্থ Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860);
(ঝ) “দেওয়ানী কার্যবিধি” অর্থ Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908);
(ঞ) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
(ট) “পক্ষ” অর্থে এমন কোন ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত হইবে, যাহার উপস্থিতি কোন বিবাদের সঠিক মীমাংসার জন্য প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হয়, এবং গ্রাম আদালত যাহাকে অনুরূপ বিবাদের একটি পক্ষ হিসাবে সংযুক্ত করে;
(ঠ) “ফৌজদারী কার্যবিধি” অর্থ Code of Criminal Proecedure, 1898 (Act No. V of 1898);
(ড) “বিধি” অর্থ এই আইনে অধীন প্রণীত বিধি;
(ঢ) “সিদ্ধান্ত” অর্থ গ্রাম আদালতের কোন সিদ্ধান্ত৷
গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য মামলা
৩৷ (১) ফৌজদারী কার্যবিধি এবং দেওয়ানী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত বিষয়াবলী সম্পর্কিত ফৌজদারী মামলা এবং দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত বিষয়াবলী সম্পর্কিত দেওয়ানী মামলা, অতঃপর ভিন্ন রকম বিধান না থাকিলে, গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য হইবে এবং কোন ফৌজদারী বা দেওয়ানী আদালতের অনুরূপ কোন মামলা বা মোকদ্দমার বিচার করিবার এখতিয়ার থাকিবে না৷
(২)3[গ্রাম আদালতে তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত কোন ফৌজদারী মামলা বিচার্য হইবে না যদি উক্ত মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি পূর্বে কোন সময়ে গ্রাম আদালত বা আমলযোগ্য অপরাধে অন্য কোন আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন], অথবা তফসিলের দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত বিষয়াবলীর সহিত সম্পর্কিত কোন মামলাও গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে না, যদি-
(ক) উক্ত মামলায় কোন নাবালকের স্বার্থ জড়িত থাকে;
(খ) বিবাদের পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত কোন চুক্তিতে সালিশের বা বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান থাকে;
(গ) সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা কর্তব্য পালনরত কোন সরকারী কর্মচারী উক্ত বিবাদের কোন পক্ষ হয়৷
(৩) যে স্থাবর সম্পত্তির দখল অর্পন করিবার জন্য গ্রাম আদালত কর্তৃক আদেশ প্রদান করা হইয়াছে, ঐ স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য বা উহার দখল পুনরুদ্ধারের জন্য কোন মোকদ্দমা বা কার্যধারার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে না৷
গ্রাম আদালত গঠনের আবেদন
৪৷ (১) যেক্ষেত্রে এই আইনের অধীন কোন মামলা গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য হয সেইক্ষেত্রে বিরোধের যে কোন পক্ষ উক্ত মামলা বিচারের নিমিত্ত গ্রাম আদালত গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আবেদন করিতে পারিবেন এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, লিখিত কারণ দর্শাইয়া উক্ত আবেদনটি নাকচ না করিলে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, একটি গ্রাম আদালত গঠন করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করিবেন৷
(২) উপ-ধারা (১) অধীন আবেদন নামঞ্জুরের আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদেশের বিরুদ্ধে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, এখতিয়ারসম্পন্ন সহকারী জজ আদালতে রিভিশন করিতে পারিবেন৷
4[(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন রিভিশনের আবেদন প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট সহকারী জজ উহা প্রাপ্তির তারিখ হইতে ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিবেন।]
গ্রাম আদালত গঠন, ইত্যাদি
৫৷ (১) একজন চেয়ারম্যান এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুইজন করিয়া মোট চারজন সদস্য লইয়া গ্রাম আদালত গঠিত হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন সদস্যকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হইতে হইবে 5[:
তবে আরো শর্ত থাকে যে, তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত ফৌজদারী মামলার সহিত নাবালক এবং তফসিলের প্রথম ও দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলার সহিত কোন নারীর স্বার্থ জড়িত থাকিলে, সংশ্লিষ্ট পক্ষ সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে একজন নারীকে সদস্য হিসাবে মনোনয়ন প্রদান করিবেন।]
(২) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম আদালতের চেয়ারম্য্যন হইবেন, তবে যেক্ষেত্রে তিনি কোন কারণবশতঃ চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে অসমর্থ হন কিংবা তাঁহার নিরপেক্ষতা সম্পর্কে কোন পক্ষ কর্তৃক প্রশ্ন উত্থাপিত হয় সেইক্ষেত্রে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সদস্য ব্যতীত উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের অন্য কোন সদস্য গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হইবেন৷
(৩) বিবাদের কোন পক্ষে যদি একাধিক ব্যক্তি থাকেন, তবে চেয়ারম্যান উক্ত পক্ষভুক্ত ব্যক্তিগণকে তাহাদের পক্ষের জন্য দুইজন সদস্য মনোনীত করিতে আহ্বান জানাইবেন এবং যদি তাঁহারা অনুরূপ মনোনয়নদানে ব্যর্থ হন তবে তিনি উক্ত ব্যক্তিগণের মধ্যে হইতে যে কোন একজনকে সদস্য মনোনয়ন করিবার জন্য ক্ষমতা প্রদান করিবেন এবং তদানুযায়ী অনুরূপ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সদস্য মনোনয়ন করিবেন৷
(৪) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন বিবাদের কোন পক্ষ চেয়ারম্যানের অনুমতি লইয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের পরিবর্তে অন্য কোন ব্যক্তিকে গ্রাম আদালতের সদস্য হিসাবে মনোনীত করিতে পারিবে৷
6[(৫) এই আইন বা আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে-
(ক) আবেদনকারী সদস্য মনোনয়ন প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে চেয়ারম্যান লিখিতভাবে এইরূপ ব্যর্থতার কারণ উল্লেখ করিয়া; অথবা
(খ) প্রতিবাদী সদস্য মনোনয়ন করিতে ব্যর্থ হইলে, আবেদনকারী বিচারযোগ্য বিষয়ে উপযুক্ত আদালতে মামলা করিতে পারিবেন মর্মে চেয়ারম্যান, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সনদ প্রদান করিয়া আবেদনপত্রটি আবেদনকারীর নিকট ফেরত দিবেন।]
গ্রাম আদালতের এখতিয়ার, ইত্যাদি
৬৷ (১) যে ইউনিয়নে অপরাধ সংঘটিত হইবে বা মামলার কারণ উদ্ভব হইবে, বিবাদের পক্ষগণ সাধারণতঃ সেই ইউনিয়নের বাসিন্দা হইলে, উপ-ধারা (২) এর বিধানাবলী সাপেক্ষে, গ্রাম আদালত গঠিত হইবে এবং উক্তরূপ মামলার বিচার করিবার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট গ্রাম আদালতের থাকিবে৷
(২) যে ইউনিয়নে অপরাধ সংঘটিত হইবে বা মামলার কারণ উদ্ভব হইবে, বিবাদের একপক্ষ সেই ইউনিয়নের বাসিন্দা হইলে এবং অপরপক্ষ ভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা হইলে, যে ইউনিয়নের মধ্যে অপরাধ সংঘটিত হইবে বা মামলার কারণ উদ্ভব হইবে, সেই ইউনিয়নে গ্রাম আদালত গঠিত হইবে; তবে পক্ষগণ ইচ্ছা করিলে নিজ ইউনিয়ন হইতে প্রতিনিধি মনোনীত করিতে পারিবে৷
মামলা দায়েরের সময়সীমা
7[৬ক। Limitation Act, 1908 (Act No IX of 1908) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, তফসিলের-
(ক) প্রথম অংশে বর্ণিত ফৌজদারী মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটিত হইবার ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে; এবং
(খ) দ্বিতীয় অংশের ক্রমিক নং ৩ এ বর্ণিত দেওয়ানী মামলা ব্যতীত অন্যান্য দেওয়ানী মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে মামলার কারণ উদ্ভব হইবার ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
প্রাক বিচার
৬খ। (১) ধারা ৫ এর অধীন গ্রাম আদালত গঠিত হইবার অনধিক ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে গ্রাম আদালতের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইবে এবং উক্ত অধিবেশনে গ্রাম আদালত উভয় পক্ষের শুনানী করিয়া মামলার বিচার্য বিষয় নির্ধারণ করিবে এবং পক্ষগণের মধ্যে আপোষ বা মীমাংসার মাধ্যমে বিচার্য বিষয় নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী আপোষ বা মীমাংসার মাধ্যমে বিচার্য বিষয় নির্ধারণ করা হইলে, উক্তরূপ উদ্যোগ গ্রহণের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন বিচার্য বিষয় নিষ্পত্তি হইলে, মীমাংসার শর্তাবলী উল্লেখপূর্বক উভয়পক্ষ যৌথভাবে একটি আপোষনামা স্বাক্ষর বা বাম হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ প্রদান করিবেন এবং সাক্ষী হিসাবে উভয়পক্ষের মনোনীত সদস্যগণ আপোষনামায় স্বাক্ষর করিবেন।
(৪) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী আপোষনামা স্বাক্ষরিত হইলে, গ্রাম আদালত নির্ধারিত ফরমে উহার আদেশ লিপিবদ্ধ করিবে এবং উক্তরূপ আদেশ গ্রাম আদালতের আদেশ বা ডিক্রী বলিয়া গণ্য হইবে।
(৫) এই ধারার অধীন আপোষনামার মাধ্যমে বিচার্য বিষয় নিষ্পত্তি করা হইলে উহার বিরুদ্ধে আপীল বা রিভিশন দায়ের করা যাইবে না।
মামলা নিষ্পত্তির সময়সীমা
৬গ। (১) ধারা ৬খ এর অধীন কোন মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে, গ্রাম আদালত ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে মামলাটির শুনানীর কার্যক্রম শুরু করিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, শুনানীর কার্যক্রম শুরু করিবার পূর্বে মামলার কোন পক্ষ, চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে, যুক্তিসঙ্গত কারণ প্রদর্শন করিয়া, তৎকর্তৃক ইতোপূর্বে মনোনীত কোন সদস্যকে পরিবর্তন করিয়া অন্য কোন সদস্য মনোনয়ন করিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (২) এর অধীন শুনানীর কার্যক্রম শুরু হইবার অনধিক ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করিতে হইবে;
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত সময়সীমার মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে, গ্রাম আদালত কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে, উক্ত মেয়াদ শেষে গ্রাম আদালত স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাঙ্গিয়া যাইবে।
(৪) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারার অধীন নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ ব্যতিরেকে গ্রাম আদালত মামলা নিষ্পত্তি করিতে ব্যর্থ হইলে এবং গ্রাম আদালত ভাঙ্গিয়া গেলে সংক্ষুব্ধ পক্ষ গ্রাম আদালত ভাঙ্গিয়া যাইবার ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন।]
গ্রাম আদালতের ক্ষমতা
৭৷ (১) এই আইনে ভিন্নরূপ কোন বিধান না থাকিলে, গ্রাম আদালত তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে কেবলমাত্র অনধিক 8[৭৫ (পঁচাত্তর)] হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে৷
(২) গ্রাম আদালত তফসিলের দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত বিষয়াবলীর সহিত সম্পর্কিত কোন মামলায় অনুরূপ বিষয়ে তফসিলে উল্লিখিত পরিমাণ অর্থ প্রদানের জন্য আদেশ প্রদান করিতে বা সম্পত্তির প্রকৃত মালিককে সম্পত্তি বা উহার দখল প্রত্যার্পণ করিবরা জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে৷
গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়া ও আপিল
৮৷ (১) গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত বা চার-এক (৪:১) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বা চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে তিন-এক (৩:১) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইলে উক্ত সিদ্ধান্ত পক্ষগণের উপর বাধ্যকর হইবে এবং এই আইনের বিধান অনুযায়ী কার্যকর হইবে৷
(২) গ্রাম আদালাতের সিদ্ধান্ত তিন-দুই (৩:২) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইলে, সংক্ষুব্ধ পক্ষ, উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ত্রিশদিনের মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে-
(ক) মামলাটি তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত কোন অপরাধের সহিত সম্পর্কিত হইলে, এখতিয়ারসম্পন্ন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আপীল করিতে পারিবে; এবং
(খ) মামলাটি তফসিলের দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত বিষয়াবলীর সহিত সম্পর্কিত হইলে, এখতিয়ারসম্পন্ন সহকারী জজ আদালতে আপীল করিতে পারিবে৷
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আপীলের ক্ষেত্রে, ক্ষেত্রমত, সংশ্লিষ্ট প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা সহকারী জজ আদালতরে নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, বিবেচ্য ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত সুবিচার করিতে ব্যর্থ হইয়াছে, তাহা হইলে, ক্ষেত্রমত, সংশ্লিষ্ট প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা সহকারী জজ আদালত গ্রাম আদালতের উক্ত সিদ্ধান্ত বাতিল বা পরিবর্তন করিতে পারিবে অথবা পুনর্বিবেচনার জন্য মামলাটি গ্রাম আদালতের নিকট ফেরত পাঠাইতে পারিবে৷
(৪) আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী অনুযায়ী গ্রাম আদালত কর্তৃক কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইলে উহা অন্য গ্রাম আদালতসহ অন্য কোন আদালতে বিচার্য হইবে না৷
গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত কার্যকরকরণ
৯৷ (১) গ্রাম আদালত কোন ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য অথবা সম্পত্তি বা উহার দখল প্রত্যার্পণ করিবার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলে, উক্ত বিষয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আদেশ প্রদান করিবে এবং তাহা নির্দিষ্ট রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিবে৷
(২) গ্রাম আদালতের উপস্থিতিতে উহার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাবী মিটানো বাবদ কোন অর্থ প্রদান করা হইলে অথবা কোন সম্পত্তি অর্পণ করা হইলে গ্রাম আদালত, ক্ষেত্রমত, উক্ত অর্থ প্রদন বা সম্পত্তি অর্পণ সংক্রান্ত তথ্য উহার রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিবে৷
(৩) যেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য গ্রাম আদালত কর্তৃক আদেশ প্রদান করা হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত অর্থ প্রদান করা না হয়, সেইক্ষেত্রে চেয়ারম্যান উহা ইউনিয়ন পরিষদের বকেয়া কর আদায়ের পদ্ধতিতে 9[স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন)] এর অধীনে আদায় করিয়া ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে প্রদান করিবে৷
(৪) যেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ প্রদান না করিয়া অন্য কোন প্রকারে দাবী মিটান সম্ভব, সেইক্ষেত্রে উক্ত সিদ্ধান্ত কার্যকর করিবার জন্য বিষয়াটি এখতিয়ারসম্পন্ন্ন সহকারী জজ আদালতে উপস্থাপন করিতে হইবে এবং অনুরূপ আদালত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করিবার জন্য এইরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে যেন ঐ আদালত কর্তৃকই উক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করা হইয়াছে৷
(৫) গ্রাম আদালত উপযুক্ত মনে করিলে তত্কর্তৃক নির্ধারিত কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদানের নির্দেশ দিতে পারিবে৷
মিথ্যা মামলা দায়েরের জরিমানা
10[৯ক। (১) যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অধীন মামলা করিবার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়াও মামলা দায়ের করেন বা করান, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা জরিমানা করা যাইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আরোপিত জরিমানার টাকা মিথ্যা মামলা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে গণ্য হইবে এবং উহা ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান অনুসারে আদায়যোগ্য হইবে।]
সাক্ষীকে সমন দেওয়া, ইত্যাদির ক্ষেত্রে গ্রাম আদালতের ক্ষমতা
১০৷ (১) গ্রাম আদালত যে কোন ব্যক্তিকে আদালতে হাজির হইতে এবং সাক্ষী দেওয়ার জন্য অথবা কোন দলিল দাখিল করিবার বা করাইবার জন্য সমন দিতে পারিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে-
(ক) দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ১৩৩ এর উপ-ধারা (১) এ যে ব্যক্তিকে স্ব-শরীরে আদালতে হাজির হইতে অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছে তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হইতে নির্দেশ দেওয়া যাইবে না;
(খ) গ্রাম আদালত যদি যুক্তিসংগতভাবে মনে করে যে, অহেতুক বিলম্ব, খরচ বা অসুবিধা ব্যতীত কোন সাক্ষীকে হাজির করা সম্ভব নয়, তবে আদালত সেই সাক্ষীকে সমন দিতে বা সেই সাক্ষীর বিরুদ্ধে প্রদত্ত সমন কার্যকর করিতে অগ্রাহ্য করিতে পারিবে;
(গ) গ্রাম আদালতের এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় বসবাসকারী কোন ব্যক্তির ভ্রমণ ও অন্যান্য খরচ নির্বাহ বাবদ, আদালতের বিবেচনামতে, পর্যাপ্ত অর্থ তাহাকে প্রদানের জন্য আদালতে জমা দেওযা না হইলে, গ্রাম আদালত ঐ ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য অথবা কোন দলিল দাখিল করিবার বা করাইবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবে না;
(ঘ) গ্রাম আদালত রাষ্ট্রীয় বিষয়াবলী সম্পর্কিত কোন গোপনীয় দলিল বা অপ্রকাশিত সরকারী রেকর্ড দাখিল করিবার জন্য কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করিবে না বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতীত অনুরূপ গোপনীয় দলিল বা অপ্রকাশিত সরকারী রেকর্ড হইতে আহরিত কোন সাক্ষ্য প্রদানের জন্য কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করিবে না৷
(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীনে জারীকৃত সমন ইচ্ছাপূর্বক অমান্য করিলে, গ্রাম আদালত অনুরূপ অমান্যতা আমলযোগ্য অপরাধ গণ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে, তাঁহার বক্তব্য পেশের সুযোগ প্রদান সাপেক্ষে, অনধিক 11[১(এক) হাজার] টাকা জরিমানা করিতে পারিবে৷
গ্রাম আদালতের অবমাননা
১১৷ (১) কোন ব্যক্তি আইনসংগত কারণ ব্যতীত যদি-
(ক) গ্রাম আদালত বা উহার কোন সদস্যকে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে অশালীন কথাবার্তা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, আক্রমনাত্মক বা অন্যবিধ আচরণ দ্বারা কোন প্রকার অপমান করেন; বা
(খ) গ্রাম আদালতের কার্যক্রমে কোনরূপ ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন; বা
(গ) গ্রাম আদালতের আদেশ সত্ত্বেও, কোন দলিল দাখিল বা অর্পণ বা হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন; বা
(ঘ) গ্রাম আদালতের যে প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি বাধ্য, সেইরূপ কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন; বা
(ঙ) সত্য কথা বলিবার শপথ গ্রহণ করিতে বা গ্রাম আদালতের নির্দেশ মোতাবেক তাহার প্রদত্ত জবানবন্দীতে স্বাক্ষর করিতে অস্বীকার করেন-
তাহা হইলে তিনি গ্রাম আদালত অবমাননার দায়ে অপরাধী হইবেন৷
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনকৃত অপরাধের ক্ষেত্রে, আদালতের নিকট কোন অভিযোগ পেশ করা না হইলেও, গ্রাম আদালত অনুরূপ অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত বাক্তির বিচার করিতে পারিবে এবং তাহাকে অনধিক 12[১(এক) হাজার] টাকা জরিমানা করিতে পারিবে৷
জরিমানা আদায়
13[১২। (১) ধারা ১০ ও ১১ এর অধীন আরোপিত কোন জরিমানা তৎক্ষণাৎ আদায় না হইলে, গ্রাম আদালত তৎকর্তৃক আরোপিত জরিমানার অর্থের পরিমাণসহ উক্ত অর্থ অনাদায়ের কারণ উল্লেকপূর্বক একটি আদেশ ইউনিয়ন পরিষদে প্রেরণ করিবে এবং উক্ত অর্থ ইউনিয়ন পরিষদ তৎকর্তৃক আরোপিত করগণ্যে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১নং আইন) এর অধীন আদায় করিবে।
(২) ধারা ১০ ও ১১ এর অধীন গ্রাম আদালতের নিকট জমাকৃত বা, ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (১) এর অধীন আদায়কৃত জরিমানার অর্থ ইউনিয়ন পরিষদ তহবিলে জমা হইবে।]
পদ্ধতি
১৩৷ 14[(১) এই আইনে ভিন্নরূপ কোন বিধান না থাকিলে, Evidance Act, 1872 (Act No. 1 of 1872) ও ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলী এবং দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ১০ ও ১১ ব্যতীত অন্যান্য বিধানাবলী গ্রাম আদালতে দায়েরকৃত মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।]
(২) গ্রাম আদালতে আনীত সকল মামলার ক্ষেত্রে Oaths Act, 1873 (Act No. X of 1873) এর sections 8, 9, 10 ও 11 প্রযোজ্য হইবে৷
(৩) কোন সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে 15[তফসিলের প্রথম অংশের] অধীন কোন মামলা দায়ের করা হইলে, তিনি যদি এই মর্মে আপত্তি উত্থাপন করেন যে, কথিত অপরাধ তাহার সরকারী দায়িত্ব পালনকালে বা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সংঘটিত হইয়াছে, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ বিচারের জন্য তাহার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনের প্রয়োজন হইবে৷
আইনজীবী নিয়োগ নিষিদ্ধ
১৪৷ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, গ্রাম আদালতে দায়েরকৃত কোন মামলা পরিচালনার জন্য কোন পক্ষ কোন আইনজীবী নিয়োগ করিতে পারিবেন না৷
সরকারী কর্মচারী, পর্দানশীল বৃদ্ধ মহিলা এবং শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির পক্ষে প্রতিনিধিত্ব
১৫৷ (১) আদালতের সম্মুখে উপস্থিত হইতে হইবে এমন কোন সরকারী কর্মচারী যদি তাহার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুপারিশসহ এই মর্মে আপত্তি উত্থাপন করেন যে, তাহার ব্যক্তিগত উপস্থিতির ফলে সরকারী দায়িত্ব পালন ক্ষতিগ্রস্ত হইবে, তাহা হইলে আদালত তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধকে তাহার পক্ষে গ্রাম আদালতের সম্মুখে হাজির হইবার জন্য অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে৷
(২) গ্রাম আদালতের সম্মুখে উপস্থিত হইতে হইবে এমন কোন পর্দানশীল বা বৃদ্ধ মহিলা এবং শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি আদালতে উপস্থিত হইয়া সাক্ষ্য প্রদান করিতে অসমর্থ হইলে আদালত তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধকে তাহার পক্ষে আদালতের সম্মুখে হাজির হইবার জন্য অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে৷
(৩) উপ-ধারা (১) বা (২) এর অধীন নিযুক্ত কোন প্রতিনিধি কোনরূপ পারিশ্রমিক গ্রহণ করিতে পারিবেন না৷
কতিপয় মামলার স্থানান্তর
১৬৷ (১) যেক্ষেত্রে 16[চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট] মনে করেন যে, তফসিলের ১ম অংশে বর্ণিত 17[ফৌজদারী মামলা] সম্পর্কিত গ্রাম আদালতে বিচারাধীন কোন মামলার পরিস্থিতি এইরূপ যে জনস্বার্থে ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে কোন ফৌজদারী আদালতে উহার বিচার হওয়া উচিত, সেইক্ষেত্রে, এই আইনে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও, তিনি গ্রাম আদালত হইতে উক্ত মামলা প্রত্যাহার করিতে এবং বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য উহা ফৌজদারী আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিতে পারিবেন৷
18[(১ক) যেক্ষেত্রে জেলা জজ মনে করেন যে, তফসিলের দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত দেওয়ানী মামলা সম্পর্কিত গ্রাম আদালতে বিচারাধীন কোন মামলার পরিস্থিতি এইরূপ যে, জনস্বার্থে ও ন্যয় বিচারের স্বার্থে কোন দেওয়ানী আদালতে উহার বিচার হওয়া উচিত, সেই ক্ষেত্রে, এই আইনে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও, তিনি গ্রাম আদালত হইতে উক্ত মামলা প্রত্যাহার করিতে এবং বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য উহা উপযুক্ত দেওয়ানী আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিতে পারিবেন।]
(২) কোন গ্রাম আদালত যদি মনে করে যে, উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত কোন বিষয় সম্পর্কিত গ্রাম আদালতে বিচারাধীন কোন মামলায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে অপরাধীর শাস্তি হওয়া উচিত্, তাহা হইলে, উক্ত আদালত, মামলাটির বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য উহা ফৌজদারী আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিতে পারিবে৷
পুলিশ কর্তৃক তদন্ত
১৭৷ এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন মামলার বিষয়বস্তু তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত অপরাধ সম্পর্কিত হওয়ার কারণে পুলিশ সংশিষ্ট আমলযোগ্য মামলার তদন্ত বন্ধ করিবে না; তবে যদি কোন ফৌজদারী আদালতে অনুরূপ কোন মামলা আনীত হয় তাহা হইলে, উক্ত আদালত উপযুক্ত মনে করিলে, মামলাটি এই আইনের বিধান মোতাবেক গঠিত কোন গ্রাম আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিতে পারিবে৷
বিচারাধীন মামলাসমূহ
১৮৷ এই আইন মোতাবেক বিচারযোগ্য যে সকল মামলা এই আইন বলবত্ হইবার অব্যবহিত পূর্বে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী আদালতে বিচারাধীন রহিয়াছে, উহাদের উপর এই আইন প্রযোজ্য হইবে না, এবং অনুরূপ মামলা অনুরূপ আদালত কর্তৃক এইরূপে মীমাংসা করা হইবে যেন এই আইন প্রণীত হয় নাই৷
অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা
১৯৷ সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন এলাকা বা এলাকাসমূহ বা যে কোন শ্রেণীর মামলাসমূহ বা যে কোন সম্প্রদায়কে এই আইনের সকল বা যে কোন বিধানের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে৷
বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা
২০৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
রহিতকরণ ও হেফাজত
২১৷ (১) The Village Court Ordinance, 1976 (Ordinance No. LXI of 1976), অতঃপর রহিত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লেখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল৷
(২) উক্তরূপ রহিত হওয়া সত্ত্বেও, রহিত অধ্যাদেশ এর অধীন-
(ক) বিচারাধীন মামলাসমূহের ক্ষেত্রে, মামলার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নসহ, উহাদের নিষ্পত্তি এইরূপে নিষ্পন্ন হইবে, যেন এই আইন প্রণীত হয় নাই;
(খ) প্রণীত সকল বিধি, এই আইনের বিধানালীর সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, কার্যকর থাকিবে৷
1 দফা (খ) গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ২(ক) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
2 দফা (গ) গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ২(খ) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
3 “গ্রাম আদালতে তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত কোন ফৌজদারী মামলা বিচার্য হইবে না যদি উক্ত মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি পূর্বে কোন সময়ে গ্রাম আদালত বা আমলযোগ্য অপরাধে অন্য কোন আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন” শব্দগুলি "গ্রাম আদালত কর্তৃক তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত কোন অপরাধের সহিত সম্পর্কিত কোন মামলা বিচার্য হইবে না যদি উক্ত মামলায় আমলযোগ্য কোন অপরাধের দায়ে কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হইয়া ইতোপূর্বে গ্রাম আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন” শব্দগুলির পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৩ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
4 উপ-ধারা (৩) গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৪ ধারাবলে সংযোজিত।
5 “:” কোলন “।“ পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত এবং শর্তাংশ গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৫(ক) ধারাবলে সংযোজিত।
6 উপ-ধারা (৫) গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৫(খ) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
7 ৬ক, ৬খ ও ৬গ গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৬ ধারাবলে সন্নিবেশিত।
8 “৭৫ (পঁচাত্তর)” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দ "পঁচিশ” শব্দের পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৭ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
9 “স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন)” শব্দগুলি, বন্ধনীগুলি, কমা ও সংখ্যাগুলি “Public Demands Recovery Act, 1913 (Act III of 1913” শব্দগুলি, কমা, সংখ্যাগুলি ও বন্ধনীর পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৮ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
10 ধারা ৯ক গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ৯ ধারাবলে সন্নিবেশিত।
11 “১(এক) হাজার” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলি "পাঁচশত” শব্দের পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১০ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
12 “১(এক) হাজার” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলি "পাঁচশত” শব্দের পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১১ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
13 ধারা ১২ গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১২ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
14 উপ-ধারা (১) গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১৩(ক) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
15 “তফসিলের প্রথম অংশের” শব্দগুলি "এই আইনের” শব্দগুলির পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১৩(খ) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
16 “চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট” শব্দগুলি "জেলা ম্যাজিস্ট্রেট” শব্দগুলির পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১৪(ক) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
17 “ফৌজদারী মামলা” শব্দগুলি "বিষয়াবলী” শব্দগুলির পরিবর্তে গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১৪(ক) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
18 উপ-ধারা (১ক) গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৬ নং আইন) এর ১৪(খ) ধারাবলে সন্নিবেশিত।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস